শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮

হিন্দু মেয়েদের জীবন

#নারী
শরীর আমার---হলুদ তোমার নামের !
হাত আমার ---মেহেন্দি তোমার নামের !
মাথা আমার ---ঘোমটা তোমার নামের !
সিঁথি আমার ---সিঁদুর তোমার নামের !
কপাল আমার ---টিপ তোমার নামের !
নাক আমার ---নথ তোমার নামের !
গলা আমার ---মঙ্গল সুত্র তোমার নামের !
কবজি আমার ---শাঁখা-পলা তোমার নামের !
পা আমার ---নুপুর তোমার নামের !
পায়ের আঙুল আমার ---চুটকী তোমার নামের !
বড়দের চরণ বন্দনা আমি করি ---সধবার আশীর্বাদ তোমার নামের ! দশমীতে সিঁদুর ও ব্রত আমি করি ---ফল তোমার দীর্ঘ জীবি ! এমন কি কোল আমার ---
রক্ত আমার ---দুধ আমার ---সন্তান তোমার নামের ---
বাড়ির দরজায় নেম প্লেটও তোমার নামের ---
এমনকি আমার গোত্রও আমার নয় ---ওটাও তোমার নামের ! সব কিছু তো তোমার নামের,,,,,
তুমিই বল ---কি আছে তোমার কাছে ??? যা আমার নামের ---একটা মেয়ে শশুরবাড়ি চলে গেল---কালকের মেয়ে আজ সংসারের বৌ হয়ে গেল---কাল অব্দি বাড়ির আদরের মেয়ে---আজ শশুর বাড়ির সেবা করতে শিখে গেল ! কাল অব্দি টিশার্ট জিনস পরা মেয়ে, আজ শাড়ি পরা শিখে গেল ! বাপের বাড়ির চলমান "ঝর্না" আজ শশুর বাড়িতে দিঘী হয়ে গেল ! প্রতিদিন আনন্দে খরচ করা মেয়ে, আজ শাক সব্জীর দাম করতে শিখে গেল !
কাল পর্যন্ত ফুল স্পীডে স্কুটী চালানো মেয়ে, আজ বাইকের পেছনে বসা শিখে গেল ! কাল পর্যন্ত তিন বেলা খাবার খওয়া মেয়ে, আজ তিনবেলা রান্না করা শিখে গেল ! সবসময় জেদ করা মেয়ে, আজ স্বামীকে জিজ্ঞাসা করা শিখে গেল ! কাল পর্যন্ত যে মাকে দিয়ে সব কাজ করাত, আজ শাশুড়ি মার কাজ করতে শিখে গেল ! কাল পর্যন্ত ভাই-বোনের সঙ্গে ঝগড়া করা মেয়ে, আজ ননদ-দেওরের মান রাখতে শিখে গেল !
কাল পর্যন্ত বউদির সঙ্গে মজা করা মেয়ে, আজ জা এর মন রাখতে শিখে গেল !
বাবার চোখের জল,,,,,,শ্বশুরের গ্লাসের জল হয়ে গেল !
তখন লোকে বলে মেয়ে শ্বশুর বাড়ি যাওয়া শিখে গেল
এই বলিদান কেবল মাত্র একটি মেয়েই করতে পারে।।

বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮

সন্তানের জন্য লিখা...

সন্তানের জন্য বাবার লেখা অসাধারন এক চিঠি।ভালো লাগলে আপনার সন্তানদেরও পড়তে দিন।
——————-
প্রিয় সন্তান,

আমি তোমাকে ৩ টি কারনে এই চিঠিটি লিখছি...
১। জীবন, ভাগ্য এবং দুর্ঘটনার কোন নিশ্চয়তা নেই, কেউ জানে না সে কতদিন বাঁচবে।
২। আমি তোমার বাবা, যদি আমি তোমাকে এই কথা না বলি, অন্য কেউ বলবে না।
৩। যা লিখলাম, তা আমার নিজের ব্যক্তিগত তিক্ত অভিজ্ঞতা- এটা হয়তো তোমাকে অনেক অপ্রয়োজনীয় কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে।

জীবনে চলার পথে এগুলো মনে রাখার চেষ্টা কোরো:

১। যারা তোমার প্রতি সদয় ছিল না, তাঁদের উপর অসন্তোষ পুষে রেখোনা। কারন, তোমার মা এবং আমি ছাড়া, তোমার প্রতি সুবিচার করা কারো দায়িত্বের মধ্যে পড়েনা। আর যারা তোমার সাথে ভালো ব্যবহার করেছে - তোমার উচিত সেটার সঠিক মূল্যায়ন করা এবং কৃতজ্ঞ থাকা। তবে তোমার সতর্ক থাকতে হবে এজন্য যে, প্রতিটি মানুষেরই প্রতি পদক্ষেপের নিজ নিজ উদ্দেশ্য থাকতে পারে। একজন মানুষ আজ তোমার সাথে ভালো- তার মানে এই নয় যে সে সবসময়ই ভালো থাকবে। কাজেই খুব দ্রুত কাউকে প্রকৃত বন্ধু ভেবোনা।🌸

২। জীবনে কিছুই কিংবা কেউই "অপরিহার্য" নয়, যা তোমার পেতেই হবে। একবার যখন তুমি এ কথাটির গভীরতা অনুধাবন করবে, তখন জীবনের পথ চলা অনেক সহজ হবে - বিশেষ করে যখন বহুল প্রত্যাশিত কিছু হারাবে, কিংবা তোমার তথাকথিত আত্মীয়-স্বজনকে তোমার পাশে পাবেনা। 🌸

3. জীবন সংক্ষিপ্ত।
আজ তুমি জীবনকে অবহেলা করলে, কাল জীবন তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কাজেই জীবনকে তুমি যতো তাড়াতাড়ি মূল্যায়ন করতে শিখবে, ততোই বেশী উপভোগ করতে পারবে। 🌸

৪. ভালবাসা একটি ক্ষণস্থায়ী অনুভূতি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষের মেজাজ আর সময়ের সাথে সাথে এই অনুভূতি বিবর্ণ হবে। যদি তোমার তথাকথিত কাছের মানুষ তোমাকে ছেড়ে চলে যায়, ধৈর্য ধরো, সময় তোমার সব ব্যথা-বিষন্নতা কে ধুয়ে-মুছে দেবে। কখনো প্রেম-ভালবাসার মিষ্টতা এবং সৌন্দর্যকে নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেনা, আবার ভালবাসা হারিয়ে বিষণ্ণতায়ও অতিরঞ্জিত হবে না।🌸

৫. অনেক সফল লোক আছেন যাদের হয়তো উচ্চশিক্ষা ছিলনা-  এর অর্থ এই নয় যে তুমিও কঠোর পরিশ্রম বা শিক্ষালাভ ছাড়াই সফল হতে পারবে! তুমি যতোটুকু জ্ঞানই অর্জন করোনা কেন, তাই হলো তোমার জীবনের অস্ত্র। কেউ ছেঁড়া কাঁথা থেকে লাখ টাকার অধিকারী হতেই পারে, তবে এজন্য তাকে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে।🌸

৬. আমি আশা করি না যে, আমার বার্ধক্যে তুমি আমাকে আর্থিক সহায়তা দিবে। আবার আমিও তোমার সারাজীবন ধরে তোমাকে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাবনা। যখনি তুমি প্রাপ্তবয়স্ক হবে, তখনি বাবা হিসেবে আমার অর্থ-সহায়তা দেবার দিন শেষ। তারপর, তোমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে- তুমি কি পাবলিক পরিবহনে যাতায়াত করবে, নাকি নিজস্ব লিমুজিন হাঁকাবে; গরীব থাকবে নাকি ধনী হবে। 🌸

৭. তুমি তোমার কথার মর্যাদা রাখবে, কিন্তু অন্যদের কাছে তা আশা করোনা। মানুষের সাথে ভালো আচরন করবে, তবে অন্যরাও তোমার সাথে ভালো থাকবে- তা প্রত্যাশা করবেনা। যদি তুমি এটি না বুঝতে পারো, তবে শুধু অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণাই পাবে। 🌸

৮. আমি অনেক বছর ধরে লটারি কিনেছি, কিন্তু কখনও কোন পুরষ্কার পাইনি। তার মানে হলো এই যে- যদি তুমি সমৃদ্ধি চাও তবে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বিনামূল্যে কোথাও কিছু জুটবে না। 🌸

৯. তোমার সাথে আমি কতোটা সময় থাকবো- সেটা কোন ব্যাপার না। বরং চলো আমরা আমাদের একসাথে কাটানো মুহুর্তগুলো উপভোগ করি ...মূল্যায়ন করি। 🌸

——————
ভালোবাসা সহ,
তোমার বাবা।

সোমবার, ২০ আগস্ট, ২০১৮

What to know about brain hypoxia.


Brain hypoxia is a form of hypoxia or oxygen deficiency affecting the brain. It occurs when the brain does not receive enough oxygen even though blood is still flowing. When oxygen supply is totally cut off, it is called brain anoxia.

Brain hypoxia is a medical emergency because the brain needs a constant supply of oxygen and nutrients to function properly.
There are several causes of brain hypoxia. They include drowning, suffocating, cardiac arrest, and stroke. Mild symptoms include memory loss and problems with motor function, such as movement. Severe cases can result in seizures and brain death.    The symptoms of a lack of oxygen to the brain, or brain hypoxia, may be mild or severe and depend on the level and duration of oxygen deprivation.

Mild symptoms of brain hypoxia include:

temporary loss of memory

problems moving parts of the body

#inattentiveness

#poor judgment

Brain cells can begin to die after just 5 minutes of oxygen loss. Symptoms become more dangerous the longer oxygen flow to the brain is cut off.

Severe symptoms of brain hypoxia include:

#coma

#seizure

#brain death

In cases of brain death, there is no brain activity. The pupils of the eyes do not respond to light and people cannot breathe without assistance from a life-support machine. However, the heart continues to pump blood around the body.

সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১৮

Benifits of activated charcoal:-short describe by Dr.Rajib Biswas(MBBS,FCPS,MD(C)

What are the benefits of activated charcoal?

By Dr.Rajib Biswas

Activated charcoal is a fine, odorless, black powder often used in emergency rooms to treat overdoses.Its toxin-absorbing properties have a wide range of medicinal and cosmetic uses, though none are scientifically proven.

Superheating natural sources of carbon, such as wood, produces activated charcoal.The black powder stops toxins from being absorbed in the stomach by binding to them.The body is unable to absorb charcoal, and so the toxins that bind to the charcoal leave the body in the feces.   Activated charcoal is not the same substance as that found in charcoal bricks or burnt pieces of food.

The manufacture of activated charcoal makes it extremely adsorbent, allowing it to bind to molecules, ions, or atoms. In this way, it removes these from dissolved substances.

Making activated charcoal involves heating carbon-rich materials, such as wood, peat, coconut shells, or sawdust, to very high temperatures.

This 'activation' process strips the charcoal of previously absorbed molecules and frees up bonding sites again. This process also reduces the size of the pores in the charcoal and makes more holes in each molecule, therefore, increasing its overall surface area.

As a result, one teaspoon full of activated charcoal has more surface area than a football field.

মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১৮

তেতুলের উপকারিতা

"তেতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় কিংবা তেতুল মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর"  ডাক্তারদের মতে এ ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।।
জেনে নেই তেতুলের উপকারিতা:-
১: হৃদরোগের জন্য উপকারী।
২: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্তনে রাখে।
৩: রক্তে কোলেস্টেরল কমায়।
৪: শরীরের মেদ কমায়।
৫: হজমে সহায়তা করে।
৬: পেটের বায়ু, হাত পা জ্বলায় তেতুলের শরবত অনেক উপকারী।
৭: তেতুল গাছের বাকল লাগালে ক্ষত সারে।
৮: বুক ধড়ফর করা, মাথা ঘোরানো রোগে তেতুল উপকারী।
৯: আমাশয়,কোষ্ঠবদ্ধতা ও পেট গরমে উপকার করে।
১০: পাকা তেতুল কাশি সারায়।
১১: তেতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ উঠা সারায়।7
১২: মুখে ঘা হলে তেতুলের পানিতে কুলি করলে উপকার পাওয়া যায়।
১৩: মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।
১৪: ক্যান্সারের জন্য উপকারী।
১৫ তেতুলের সাথে রসুন খেলে রক্তের চর্বি কমে।
১৬: তেতুল খিদে বাড়ায় বমি বমি ভাব দূর করে।
১৭: তেতুলের পাতা ম্যালেরিয়া জ্বর সারায়।
১৮: শিশুদের পেটের কৃমি দূর করে।
১৯: বাত ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে।
______________________________

সোমবার, ২ জুলাই, ২০১৮

লিভারের জটিল রোগসমূহ, লক্ষণ ও চিকিৎসায় করণীয় নিয়ে ডাঃ রাজীব বিশ্বাস (MBBS,FCPS) বললেন:-

লিভারের জটিল রোগসমূহ, লক্ষণ ও চিকিৎসায় করণীয় নিয়ে ডাঃ রাজীব বিশ্বাস (MBBS,FCPS) বললেন:-

মানব দেহের অতীব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল লিভার (যকৃত)। দেহকে সুস্থ্য ভাবে কার্যক্ষম রাখার জন্য এই লিভারকে অনেক কাজ করতে হয় যেমন খাদ্য হজম করতে, গ্লাইকোজেনের সঞ্চয়, প্লাজমা প্রোটিন সংশ্লেষণ, ঔষুধ বা অন্যান্য রাসায়নিক নির্বিষকরণ, পিত্তরস উৎপাদন, রক্ত পরিস্রুত করণ ইত্যাদি। উল্লেখিত কাজ ছাড়াও লিভার দেহের আরও কিছু জৈব-রাসায়নিক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এক কথায় বলতে গেলে লিভার হলো মানব দেহের একটি পাওয়ার স্টেশন যার সুস্থতার উপর আমাদের দেহের অন্যান্য অনেক কিছুই নির্ভর করে।

লিভার সুস্থ্য রাখতে লিভারের জটিল রোগসমূহসম্পর্কে আমাদের সবার সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন কারন লিভারের রোগের লক্ষণাদি সহসাই প্রকাশ পায় না এমন কি লিভারের এগারো ভাগের একভাগ অংশ ও যদি ভালো থাকে তবে সে অবস্থাতেও লিভারের রোগ প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই আমাদের খুব ভাল করে এর যত্ন, রোগ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতন থাকা দরকার। তাই এর গুরুত্ব অনুধাবন করে আমাদের দেশে যে সব লিভারের জটিল রোগ হয়ে থাকে সেই সব রোগ এর লক্ষণ, প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় করণীয় সম্পর্কে কিছু বর্ননা করা হলো।

ভাইরাল হেপাটাইটিস:-
হেপাটাইটিস হলো লিভারে প্রদাহ, সাধারনত হেপাটাইটিস এ, বি, সি, ডি এবং ই ভাইরাস দ্ধারা স্বল্প মেয়াদী প্রদাহ কে ভাইরাল হেপাটাইটিস বলে। আমরা অনেকেই এই ধরনের রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে জন্ডিস বলি। দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ‘এ’ এবং ‘ই’ ভাইরাস ছড়ায় এবং স্বল্প মেয়াদী লিভার প্রদাহ করে থাকে।

ভাইরাল হেপাটাইটিস এর লক্ষণ
একিউট ভাইরাল হেপাটাইটিস বা স্বল্পমেয়াদী লিভার প্রদাহের প্রধান লক্ষণগুলো হলো— জন্ডিস, খাবারে অরুচি, উপরের পেটের ডান দিকে বা মাঝখানে ব্যথা, বমি বমি ভাব ও বমি, দুর্বলতা ও জ্বর।

ভাইরাল হেপাটাইটিস হলে করণীয়
রোগীকে হলুদ, মরিচ, তরিতরকারি, মাছ-মাংস ইত্যাদি স্বাভাবিক খাবার খেতে দিন। ফল, ডাবের পানি, আখের রস ইত্যাদি খাওয়াবেন না। ঘন ঘন গোসল করাবেন না। ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে যদি রোগের লক্ষণ ভালো না হয়, তবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। রোগ ধরা পরার পর কেউ অস্থিরতা, অস্বাভাবিক আচরণ করলে বা অজ্ঞান হলে, এটা মারাত্মক জরুরি অবস্থা। তাকে অনতিবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

ক্রনিক হেপাটাইটিস:-
লিভারের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের ফলে যেসব রোগ হয়ে থাকে তাকে ক্রনিক হেপাটাইটিস বলে। হেপাটাইটিস বি, সি ও ডি ভাইরাস রক্ত কিংবা দূষিত সিরিঞ্জ বা সুচের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে হেপাটাইটিস ই-ভাইরাস রক্তের মাধ্যমেও ছড়ায়। বাংলাদেশে ক্রনিক হেপাটাইটিসের প্রধান কারণ হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস। রোগী প্রাথমিক অবস্থায় বুঝতেই পারেন না কখন তিনি বি অথবা সি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসাবিহীন থাকলে এই সংক্রমণ মাসের পর মাস লিভার এর ক্ষতি করে। এমনকি লিভার সিরোসিসে রূপ নেয় এবং পরে লিভার ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে। উল্লেখ্য, হেপাটাইটিস ‘বি’ এবং ‘সি’ ভাইরাস আমাদের দেশে যথাক্রমে ৬০ ও ৩০ শতাংশ লিভার সিরোসিস এবং যথাক্রমে ৬৪ ও ১৭ শতাংশ হেপাটোসেলুলার কারসিনোমা বা লিভার ক্যান্সার এর জন্য দায়ী।

ক্রনিক হেপাটাইটিসের লক্ষণসমূহ:-
ক্রনিক ভাইরাল হেপাটাইটিস তথা দীর্ঘ মেয়াদী লিভার প্রদাহে ভাইরাস সুপ্ত অবস্থায় লিভারের কোষে বংশবৃদ্ধি করতে থাকে। ফলে কোনো সুস্পষ্ট লক্ষণ পাওয়া যায় না। কারও কারও ক্ষেত্রে দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা ও পেটে হালকা ব্যথা অনুভূত হতে পারে। রোগের লক্ষণ দেখে পরীক্ষা ছাড়া বোঝার উপায় নেই কোন ভাইরাস হয়েছে। কিন্তু যাদের ক্রনিক ভাইরাল হেপাটাইটিস থেকে লিভার সিরোসিস হয়ে যায় তাদের ক্ষুধামন্দা, পেটের অসুখ, শরীর শুকিয়ে যাওয়া, জন্ডিস, পেটে পানি আসা ও চেতনালোপ জাতীয় লক্ষণ দেখা দেয়।

ক্রনিক হেপাটাইটিস হলে করণীয় ও চিকিৎসা
এমতাবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে পরিক্ষা করাতে হবে যে এই ভাইরাসের প্রাণ HBV DNA বা HBeAg রক্তে বহমান কিনা? এবং তা ছয় মাসের বেশি সময় ধরে পজেটিভ কিনা? ভাইরাসটা লিভারে সংক্রামিত হয়ে লিভারের ক্ষতি করে লিভার এনজায়েম ALT(SGPT) বাড়িয়ে দিয়েছে কিনা? যদি রোগীর রক্তে HBV DNA বা HBeAg ছয় মাসের বেশি সময় পরেও বিদ্যমান থাকে, রক্তে ALT (SGPT) দুই বা আড়াই গুণেরও বেশি থাকে তখন মানুষটি রোগী বলে বিবেচিত হবেন। কিন্তু ALT (SGPT) পরিমাণ যদি স্বাভাবিক থাকে, HBV DNA ও HBeAg নেগেটিভ থাকে তবে কিন্তু তিনি রোগী নন, HBsAg বহনকারী সুস্থ Carrier, তার চিকিৎসা অনাবশ্যক, তিনি এই রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাহীন এবং এর প্রতিষেধকও নিতে পারবেন না।

লিভার সিরোসিস:-

লিভার সিরোসিস একটি মারাত্মক ও অনিরাময়যোগ্য রোগ। তবে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে লিভার সিরোসিস থেকে অনেকটা দূরে থাকা যায়। এতে যকৃৎ বা লিভারের কোষকলা এমনভাবে ধ্বংস হয়ে যায় যে তা সম্পূর্ণ বিকৃত ও অকার্যকর হয়ে পড়ে এবং প্রদাহ এর কারণে লিভারে ফাইব্রোসিস এবং নুডিউল বা গুটি গুটি জিনিস তৈরি হয় ফলে লিভার এর যেসব স্বাভাবিক কাজ আছে, যেমন বিপাক ক্রিয়া, পুষ্টি উপাদান সঞ্চয়, ওষুধ ও নানা রাসায়নিকের শোষণ, রক্ত জমাট বাঁধার উপকরণ তৈরি ইত্যাদি কাজ ব্যাহত হয়। দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। এ ছাড়া কিছু জন্মগত অসুখের কারণেও এই সমস্যা হয়ে থাকে যেমন, ওইলসন ডিজিজ, হেমোক্রোমেটাসিস ইত্যাদি। ধীরে ধীরে এই রোগ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। তাই সকলের আগে থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।

লিভার সিরোসিসের লক্ষণ
প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়তে দেরি হয় তবে সাধারনত রক্তস্বল্পতা, রক্ত জমাট বাঁধার অস্বাভাবিকতা, যকৃতে বেশি পরিমাণে জৈব রসায়ন, বেশি বিলুরুবিন, কম সিরাম অ্যালবুমিন ইত্যাদি সমস্যা ধরা পড়তে পারে। সিরোসিস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ও যকৃতের বায়োপসি করতে হয়। সাধারণত খাদ্যে অরুচি, ওজন হ্রাস, বমি ভাব বা বমি, বমি বা মলের সঙ্গে রক্তপাত, শরীরে পানি আসা ইত্যাদি হলো মূল উপসর্গ। পরে যকৃতের অকার্যকারিতার সঙ্গে কিডনির অকার্যকারিতা, রক্তবমি, রক্তে আমিষ ও লবণের অসামঞ্জস্য ইত্যাদি জটিলতা দেখা দেয়।

লিভার সিরোসিস হলে করণীয় ও চিকিৎসা
লিভার সিরোসিস চিকিৎসার মূল বিষয় হচ্ছে প্রতিরোধ। যেসব কারণে লিভার সিরোসিস হয়ে থাকে, বিশেষ করে হেপাটাইটিস বি-এর যেহেতু প্রতিশেধক আছে। তাই আমাদের উচিত প্রত্যেকেরই এই প্রতিশেধক নেওয়া। পাশাপাশি কিছু সচেতনতা জরুরি। দূষিত কোনো সূঁচ বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করা, কোনো দূষিত রক্ত পরিসঞ্চালন না করা পাশাপাশি সেলুনে সেভ করাসহ যেকোনো কাটাকাটি বা সেলাইয়ের সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। রোগীদের কাছ থেকে সরাসরি এই ভাইরাস সংক্রমিত হয় না।